সিআইডির হাতে এসেছে ২০০ জন শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার প্রমাণ

মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। এর সঙ্গে ওই চক্রের ২০০ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ ইতোমধ্যে সিআইডির হাতে এসেছে। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এক তদন্ত কর্মকর্তা।
দেশের শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেফতারের পরই এমন তথ্য পায় সিআইডি। জড়িত ওই ২শ জনের মধ্যে জালিয়াতি করে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর নামও জানা গেছে.
নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সালে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে শোভন নামে এক শিক্ষার্থী ভর্তি হয় খুলনা মেডিকেল কলেজে। আরেক শিক্ষার্থী মাহমুদা পারভীন ঋতু বরিশাল মেডিকেল কলেজে , রিয়াদ ভর্তি হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে।এছাড়া নাজমুল হক সজল জামালপুর মেডিকেল কলেজে এবং মুবিন নামে আরেক শিক্ষার্থী স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চান্স পেলে ও ভর্তি হয় বেসরকারি ইব্রাহিম কার্ডিয়াক মেডিকেল কলেজে।
এর আগে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ২৩ জুলাই গ্রেফতার ৫ জনের ৩ জনকে ৭ দিন করে রিমান্ডে পাঠায় আদালত। বাকি দু’জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, সন্দেহভাজন হিসেবে গত ১৯ জুলাই এস এম সানোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুরে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আরো ৫ জনকে।
সিআইডি জানায়, প্রেসের মেশিনম্যান সালাম এবং তার খালাতো ভাই জসীম- এ দুজন গড়ে তুলেছিলেন এ চক্র। দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে পুরো চক্রটিকে চিহ্নিত করেছে সিআইডির তদন্তকারী দল।
প্রশ্নপত্র ফাঁস করা চক্রের সদস্যদের অবৈধ সম্পদেরও খোঁজ পেয়েছে সিআইডি। চক্রের হোতা জসিমের ঢাকায় দুটি বাড়ি ও একটি গাড়ি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে ২০ জুলাই গ্রেফতারের পর সিআইডি জানিয়েছিল, জসিমের কাছে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক পেয়েছিল সিআইডি।
সিআইডি আরো জানায়, দেশব্যাপী চক্রটির প্রায় অর্ধশত সহযোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে। আসামিরা সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছাপাখানা থেকে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করেছে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কাছে সেই প্রশ্ন পৌঁছে দিতো তারা।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ সুপার এস এম আশরাফুল আলম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিন আসামি জিজ্ঞাসাবাদে তাদের আশ্রয়–প্রশ্রয়দাতা, সহযোগিতাকারী এবং জালিয়াতি করে যারা মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন তাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ভর্তি হওয়া কিছু শিক্ষার্থীর নামও বলেছেন তারা। এসব তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এছাড়া, রোববার (২৬ জুলাই) সিআইডি জানায়, প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।