চুরি করতে গিয়ে একই পরিবারের ৪ জনকে জবাই

ঢাকার গাজীপুরের শ্রীপুরে মোবাইল ফোন চুরি করতেছে চিনে ফেলায় ওই চারজনকে খুন করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে পারভেজ নামে এক ঘাতক।
আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পারভেজকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গাজীপুর পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানায়।
পিবিআই ইন্সপেক্টর হাফিজুর রহমান বলেন গ্রেপ্তার হওয়া পারভেজ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আগে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম- এর আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন তারপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর পিবিআই ইউনিট ইনচার্জ নাসির আহমেদ শিকদার জানিয়েছেন, শ্রীপুরের আবদার গ্রামে মালয়েশিয়াপ্রবাসী রেজওয়ান হোসেনের তিন সন্তান খুন হওয়ার ঘটনা গাজীপুর পিবিআই তদন্ত শুরু করেন। বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে গত রোববার এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ঘটনাস্থল বসবাসকারী পারভেজকে (১৭) পুলিশ গ্রেফতার করেন।
পিবিআই এর জিজ্ঞাসা করার পর পারভেজ জানায় ২৩ এপ্রিলধরাতে কাজলের স্ত্রী ও বড় মেয়ে টাচ মোবাইল চুরির উদ্দেশ্যে প্রতিবেশী বাবুলের বাড়ির পিছন দিক দিয়ে কাজলের বাড়ির দেয়ালে হয়ে থাকা ইট বেয়ে সে ছাদে উঠে গিয়েছিল। তার নিজের কাছে থাকা ব্লেড দিয়ে ছাদের কাপড় শুকানোর রশি কেটে তাদের সাথে বেঁধে সে দোতলার বাথরুমের ফাঁকা দিয়ে বাসায় ঢোকে। তারপর ওয়াশিং মেশিন এর উপর পা দিয়ে নিচে নেমে নুরা ও হাওয়ারিনের ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে সে খাটের তলায় লুকিয়ে থাকে।
নুরা যখন তার কানে হেডফোন ছিল ছোট হাওয়ারিন ঘুমিয়ে ছিল। এই ঘটনার আনুমানিক ১ ঘন্টার পর সবাই যখন ঘুমিয়ে গিয়েছিল সে নিচতলায় নেমে রান্নাঘর থেকে বটি নিয়ে আসে।দোতালায় উঠে সে প্রথমে মোবাইলের জন্য নুর আর মায়ের কক্ষে দরজার লক খোলার চেষ্টা করে। ঠিক সেই সময় শব্দকে ঘুরার মত জেগে ওঠে। এবং তিনি ভালোভাবে খোঁজ করেন বাথরুম এর আশেপাশে কেউ আছে কিনা। নুরার মা (কাজলের স্ত্রী) তাকে দেখে চিনে ফেলে এবং চিৎকার দেয়। ঠিক ঘটনাস্থলে পারভেজ কাজলের স্ত্রীকে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপায়। ফাতেমা তখন অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় মাটিতে।
শব্দ পেয়ে নুরা ঘুম থেকে উঠে দেখল এই অবস্থা তখন তাকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ভয়ঙ্কর ভাবে জখম করে পারভেজ। পরে নুরা এর ছোট ভাই ফাদিল জেগে উঠলে তার মাথায় কোপ মারে এবং পরে তাকে জবাই করা হয়। সে সময় হাওয়ারিন ঘুম থেকে জেগে উঠে চিৎকার করে আসলে তাকেও খোপায় পারভেজ।
তারপর সে নুরাকে ধর্ষণ করে। নীরার মাকে ওড়না দিয়ে হাত পা বেঁধে অর্ধমৃত হাওয়রিনকেও সে ধর্ষণ করে।এরপর সবাইকে গলাকেটে হত্যা করে।
তারপর পারভেজ নুরার মার গলার একটি স্বর্ণের চেইন কানের দুল হাওয়ারিনের কানের দুল খুলে নেয়।এরপর ঘরে গিয়ে আলমারী খুলে দুটো স্বর্ণের চেইন একটি আংটি একটি লাল ছোট ডায়েরি, নুরার মায়ের রুম থেকে দুটি বড় টাচ ফোন নিয়ে যায়।
আজ সোমবার তার স্বীকারোক্তি মতে পারভেজ এর ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার এবং দুটি টাচ মোবাইল উদ্ধার করেন।
উল্লেখ্য যে পারভেজের এর আগে আরো একটি মামলা দায়ের করা ছিল। ২০১৮ সালে তার পার্শ্ববর্তী আপন চাচার ভারতের মেয়েকে ধর্ষণ করে গলা টিপে হত্যা করে। এই মর্মে শ্রীপুর থানায় তাকে জাহান্নাম অক পূর্বক আসামি দিয়ে মামলা করা হয়। ৯ মাস জেল হাজত বাসের পর সে কিছুদিন আগে জামিনে মুক্তি পায়।